কৌশিক হোসেন, পাবনা :
রোড সেফটি, স্বজন এবং স্কুল ক্যাম্পেইন—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ইস্যুতে এক দশক ধরে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়োলো ল্যাম্প তার ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে ব্যতিক্রমী ও মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ব্যাংগাড়ী এলাকার রজু প্রামানিকের বাড়ির পাশে লিচুবাগান প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দোকান উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠিত হয়।
আনুষ্ঠানিকতার ব্যয় কমিয়ে এবারের বর্ষপূর্তিতে সংগঠনটি শারীরিক প্রতিবন্ধী রজু প্রামানিককে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেয়। তার বাড়ির সামনের পাকা রাস্তার গোড়ায় নির্মাণ করে দেওয়া হয় একটি মুদিখানা দোকান—যা তাকে আবার স্বনির্ভর হওয়ার নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একেএল পলিমারের স্বত্বাধিকারী ও পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ সভাপতি রাসেদুজ্জামান রাসেদ। তিনি বলেন, “শুধু আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান নয়—মানুষের জীবনে আলো ফিরিয়ে আনাই প্রকৃত সামাজিক দায়িত্ব।”
সংগঠনের সভাপতি শহিদুল্লাহ খান উজ্জ্বলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সিএনএফ টিভির চেয়ারম্যান খালেদ আহমেদ ও
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি এসএম সালাউদ্দিন সোহাগ।
সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম শোভন এর সঞ্চালনায় ইয়োলো ল্যাম্পে দীর্ঘদিনের অবদান রাখার জন্য সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়, কৌশিক হোসেন, মাসুম ফরহাদ, ইবাদত হোসেন, তানভীর আহম্মেদ, শাহরিয়ার ইসলাম তামিম, আদনান হোসেন, মামুন হোসেন ও মোস্তফা আবিরকে।
রজু প্রামানিক (৭০) একসময় কৃষিকাজ ও রাখালের কাজ করতেন। প্রায় ছয় বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ডান পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১২ বার অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে গেলেও শুরুতে ডাক্তাররা পা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অর্থাভাবে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পারায় তার একমাত্র ছেলে বাবার দায়িত্ব এড়িয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। পাঁচ মেয়েকে নিয়ে রজুর সংসার আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে ইয়োলো ল্যাম্প তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ভার বহন করে তাকে সুস্থ করে তোলার পাশাপাশি এবার দোকান স্থাপন করে তার জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে।
0 Comments