Header Ads Widget

Responsive Advertisement

পাবনায় রাহেদ আলী প্রামানিক বংশের মিলনমেলা : ২৫০ বছরের পারিবারিক ঐতিহ্য

 


জুবায়ের খান প্রিন্স, পাবনা

পারিবারিক বন্ধন, মানবিকতা ও সামাজিক ঐক্যকে নতুন করে জাগ্রত করার লক্ষ্য নিয়ে পাবনার "রাহেদ আলী পল্লী"তে বংশপরম্পরায় ২৫০ বছরের পারিবারিক ইতিহাস স্মরণে দিনব্যাপী আলোচনা সভা, পারিবারিক মিলনমেলা ও গোরস্থানে সম্মিলিত দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ফজর নামাজের পর থেকে শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় পাবনা সদর উপজেলার চকপৈলানপুর নয়নামতি এলাকা রাহেদ আলী পল্লীতে।

অনুষ্ঠানে প্রয়াত রাহেদ আলী প্রামানিকের পাঁচ ছেলে ও পাঁচ মেয়ের নাতি–নাতনি, তাদের সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্ম মিলিয়ে এক বিশাল পারিবারিক সমাবেশ ঘটে। পাশাপাশি রাহেদ আলী প্রামানিকের পূর্ববর্তী পাঁচ পুরুষ এবং পরবর্তী পাঁচ পুরুষের ইতিহাস, বংশ পরিচয়, উত্থান-পতন, বসতিস্থল পরিবর্তন, কর্ম ও পেশাগত অবদান নিয়ে বিস্তর আলোচনা ও পরিচয় তুলে ধরা হয়।

মিলনমেলায় ৫০টিরও বেশি পরিবারের প্রায় ২০০ জনের অধিক নারী, পুরুষ ও শিশু অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বংশের সদস্যদের পাশাপাশি প্রবাসে অবস্থানরত অনেকে অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। স্মৃতিচারণে আবেগাপ্লুত হয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। দীর্ঘদিনের ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে হাতে হাত, বুকে বুক রেখে একে অপরকে মিলিয়ে দেওয়া হয়—যা অনুষ্ঠানের আবেগী মুহূর্তগুলোকে আরও গভীর করে তোলে।

অনুষ্ঠানে প্রত্যেক পরিবারকে স্মৃতিস্বরূপ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। জীবিত মুরুব্বিদের বিশেষ সম্মাননা, নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য খেলাধুলা এবং বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়। তিন বেলা খাবারের আয়োজনের পাশাপাশি বিকেলে উন্মুক্ত পিঠা উৎসব মিলনমেলায় উৎসবের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

কুরআন তেলাওয়াত, দোয়া মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। পাশাপাশি বংশের সকল আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত ও সম্মিলিত মোনাজাত করা হয়।

আয়োজকরা বলেন, বর্তমান সময়ে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারে রূপ নেওয়ার প্রবণতা, সামাজিকতা ও মানবিকতার অবক্ষয়, পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ও স্বার্থের সংঘাত বাড়ছে। এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পারিবারিক ঐক্য, ভালোবাসা ও মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতেই এই সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তারা আরও জানান, ভবিষ্যতে শতাধিক পরিবারের হাজারো সদস্যকে নিয়ে আরও বৃহৎ পরিসরে এমন পারিবারিক মিলনমেলা আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি ‘রাহেদ আলী প্রামানিক ট্রাস্ট’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে বংশের সদস্যদের পাশাপাশি যেকোনো অসহায় মানুষের সেবায় কাজ করা হবে। প্রতি বছর নিয়মিতভাবে এই আয়োজন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রাহেদ আলীর নাতি জুবায়ের খান প্রিন্স ও আব্দুস সালাম।

Post a Comment

0 Comments

বৈশিষ্ট্যযুক্ত খবর

পাবনায় রাহেদ আলী প্রামানিক বংশের মিলনমেলা : ২৫০ বছরের পারিবারিক ঐতিহ্য