Header Ads Widget

Responsive Advertisement

পাবনা ইছামতি নদী ইজারা দেওয়ায় জেলা প্রশাসকসহ ১৩ দপ্তরে বেলা'র উকিল নোটিশ



ওয়ান মিনিট টিভি ডেস্ক : 

পাবনা ইছামতি নদী ইজারা দেওয়ায় জেলা প্রশাসককে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা‘র উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। 

রবিবার ৯ নভেম্বর বেলার আইনজীবী বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের এডভোকেট এস হাসানুল বান্নার পাঠানো  নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ৯ নং নোটিশ গ্রহীতা জেলা প্রশাসক পাবনা ০৫.৪৩.৭৬০০.০২৮.৪০.০০১.(৬)১৬.২৬৯১ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে সরকারি জলমহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন যার মাধ্যমে ২০ একরের উর্ধ্বে বদ্ধ জলমহাল ইজারা প্রদানের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছে । এ বিজ্ঞপ্তিতে ইজারার জন্য পাবনা জেলায় বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ২৬টি জলমহালের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশকৃত জলমহালের তালিকায় ০৬টি নদী ও কয়েকটি খাল রয়েছে। জলমহাল নীতিমালা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল অনুযায়ী দেশে দু'ধরনের জলমহাল রয়েছে। বদ্ধ জলমহাল ও উন্মুক্ত জলমহাল। নদী ও খাল উন্মুক্ত জলমহাল হিসেবে চিহ্নিত। গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৫ এ নংভূম/৭-বিবিধ-১১/৯৫/৫৭৬ স্মারকের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র জেলে সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণার্থে এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের পথ সুগম করার লক্ষ্যে নদী, খাল ও উন্মুক্ত শ্রেণির সকল জলমহালের ইজারা প্রদান প্রথা বিলুপ্ত করা হয়। 

গত ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯ এবং ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখে মহামান্য আদালত ১৩৯৮৯/২০১৬ নং রীট মামলার শুনানিঅন্তে দেশের সকল নদীকে আইনি ব্যক্তি (ষবমধষ ঢ়বৎংড়হ)/ আইনি সত্ত্বা (ষবমধষ বহঃরঃু)/ জীবন্ত সত্ত্বা (ষরারহম বহঃরঃু) ঘোষণা করে রায় প্রদান করেছেন। একই রায়ে মহামান্য আদালত নদ-নদীসহ সকল উন্মুক্ত জলাভূমিকে জনগণের ন্যাস্ সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী নদী ও খালকে বদ্ধ জলমহালে রূপান্তর করার বা বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। ১নং নোটিশ গ্রহীতা কর্তৃক নদী, খাল ও উন্মুক্ত শ্রেণির সকল জলমহালের ইজারা প্রদান প্রথা বিলুপ্ত করা সত্ত্বেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে নদী ও খালকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে ব্যক্তিবিশেষের নিকট ইজারা প্রদানের কোনো এখতিয়ার ৯ নং নোটিশ গ্রহীতার নেই। তাছাড়া ন্যাস্ সম্পত্তি বা জনগণের সম্পত্তি ইজারা প্রদান করা হলে নদীর উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর অধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হবে এবং নদীতে অবাধে প্রবেশাধিকার বাধাগ্রস্ত হবে দরিদ্র মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের। নদী ও খালকে ৯ নং নোটিশ গ্রহীতা কর্তৃক বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ইজারা প্রদানের এমন উদ্যোগ দেশে প্রচলিত আইন ও আদালতের আদেশের পরিপন্থী’। সকল নদীকে নদী বিরুদ্ধ ব্যবহার থেকে রক্ষা করা আপনার দায়িত্ব, যা পালনে আপনি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। উপরোক্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর পক্ষে নিম্নস্বাক্ষরকারী অত্র নোটিশের মাধ্যমে গত ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ৯ নং নোটিশ গ্রহীতা কর্তৃক প্রকাশিত সরকারি জলমহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিতের জোরালো দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে পাবনা জেলার সকল নদী ও খালকে বদ্ধ জলমহালের তালিকা বহির্ভূত করার ও ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকার দাবি জানাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার গৃহীত পদক্ষেপ নোটিশ প্রেরণের ০৭ (সাত) দিনের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারীকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

যেসব দপ্তরে নোটিশ দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো যথাক্রমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব; মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; মাননীয় সরকার বিভাগের সচিব; কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব; জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক; পাবনা জেলা প্রশাসক; পাবনা পুলিশ সুপার; পরিবেশ অধিদপ্তর (রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়)-এর পরিচালক; পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর পাবনার সহকারী পরিচালক। 

প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর দৈনিক সিনসা‘র প্রথম পৃষ্ঠায় “ ইছামতি-পদ্মা ইজারা দিচ্ছে জেলা প্রশাসক” শিরোনামে খবর প্রকাশিত হওয়ায় বিষয়টি বেলার নজরে আসে।  

Post a Comment

0 Comments

বৈশিষ্ট্যযুক্ত খবর

বগুড়ায় টিএমএসএসের উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ