পাবনায় দিনের বেলায় চুরি, রাতে চেতনানাশক স্প্রে আতঙ্ক —
ভাঁড়ারা ইউনিয়নে পরিবারের নিরাপত্তাহীনতা চরমে
জুবায়ের খান প্রিন্স, পাবনা :
পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের শাহী মসজিদের পার্শ্বে একই দিনে গৃহচুরি ও রাতে চেতনানাশক স্প্রে আতঙ্কের ঘটনায় একটি পরিবার মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। চুরি হওয়া টাকা–স্বর্ণালংকার উদ্ধারের পাশাপাশি অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মো. আনিসুর রহমান (২৯)।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়— ১৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ বেলা ১১টার দিকে আনিসুরের স্ত্রী মোছা. শিলা খাতুন (২৬) ঘরের মেইন গেটে তালা লাগিয়ে পাশের বাড়িতে যান। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, গেট ভিতর থেকে আটকানো। প্রতিবেশীদের ডেকে তালা খুলে ঘরে প্রবেশ করলে দেখা যায়—ঘর এলোমেলো, কেবিনেটের গোপন ড্রয়ার ভাঙা এবং ড্রয়ারে থাকা নগদ ১ লক্ষ টাকা ও ১ ভরি ২ আনা স্বর্ণালংকার (মূল্য প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা) চুরি গেছে।
প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে অজ্ঞাত চোরেরা বাড়ির পেছন দিক দিয়ে প্রবেশ করে পরিকল্পিতভাবে চুরির ঘটনা সংঘটিত করে। ঘটনাটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জানেন এমন সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন—১। মোছাঃ শিলা খাতুন (২৬), ২। মোছা. সেলিনা খাতুন (৪৮) এবং ৩। আলহাজ্ব মো. ওলি উল্লাহ (৪৫)। এছাড়া ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ ও এলাকাবাসীর আরও অনেকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত।
চুরির ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেয়। পরিবারের দাবি—রাতের বেলা কে বা কারা ঘরের বাইরে থেকে চেতনানাশক স্প্রে ছড়িয়ে দেয়। এতে তারা শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন এবং পুরো পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উদ্বেগ ও আলোচনা শুরু হয়েছে।
চুরি যাওয়া টাকা–গয়না বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর ব্যর্থ হয়ে আনিসুর রহমান ঐ দিনেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান— “এভাবে বসতবাড়িতে দিনের বেলায় চুরি হয়ে যাওয়া এবং রাতে স্প্রের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটায় আমরা অত্যন্ত আতঙ্কিত। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ—এলাকায় সম্প্রতি বিভিন্ন বাড়িতে চুরি, ঢুকতে চেষ্টা ও সন্দেহজনক ব্যক্তির চলাফেরার ঘটনা বেড়েছে। অপরাধীরা ধরা না পড়ায় সাধারণ মানুষ চরম আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। তারা দ্রুত পুলিশি টহল বাড়ানো এবং চক্রটিকে শনাক্ত করার দাবি তুলেছেন।
পাবনা থানার তদন্তরত এএসআই রঞ্জু জানায়—অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, আলামত সংগ্রহ, জিজ্ঞাসাবাদসহ তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি গুরুতর হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার বলছে— “আমরা শুধু চুরি যাওয়া জিনিস ফেরত চাই না, আমরা নিরাপদে থাকতে চাই। এখন রাতেও ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না।”
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, তদন্ত চলছে এবং ঐ এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।
0 Comments