ওয়ান মিনিট টিভি ডেস্ক :
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের সাথে সংহতি এবং শিক্ষকদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে পাবনার সাঁথিয়ায় স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার সময় সাঁথিয়া উপজেলা গেটের সামনে সাঁথিয়ার বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজের শিক্ষকরা এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। জোড়গাছা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল হাই এর সভাপতিতত্বে এবং দাড়ামুদা খোয়াজ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক নাছির উদ্দিন এর পরিচালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাথিয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক লেখক ও নদী গবেষক ড. মো. মনছুর আলম, জোড়গাছা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন উল্লাস, সাঁথিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক আশরাফ আলী, দৌলতপুর ইমাম হোসাইন একাডেমির শিক্ষক আনসার আলী, দাড়ামুদা খোয়াজ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ইউনুস আলী এবং আব্দুস সালাম প্রমুখ।
শিক্ষকগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, ৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অনতিবিলম্বে ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ হারে উৎসব বোনাস প্রদানের আহ্বান জানান। শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের বল প্রয়োগের তিব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, দোষী পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমার ভাইদের যারা রক্তাক্ত করেছে, শার্টের কলার ধরে টানা-হেঁচড়া করেছে তাদের বিচার করতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ঘোষিত শিক্ষকদের দাবি আদায়ের যে কোনো কর্মসূচি সাঁথিয়ার শিক্ষকরা পালন করবে।
মানববন্ধনে সাঁথিয়ার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষকগণ ছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ওদিকে ঢাকায় আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী গতকাল শহিদ মিনার থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ করবেন বলে জানা যায়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্য হলো ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থানরত শিক্ষকগণ আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে মার্চ টু সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হন। তবে পুলিশি বাঁধার কারণ তা পণ্ড হয়ে যায়। বর্তমানে তারা শহিদ মিনার চত্বরে অবস্থান করছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি বা গঠনমূলক আশ্বাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন, একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও শিক্ষকদের ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচিসহ সব আন্দোলন চলবে। রবিবার শিক্ষকদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমাদের পাঁচ জন সহযোদ্ধাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এই সরকার থেকে এটা আমরা আশা করিনি। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যেহেতু আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি, সেহেতু আপনারা সবাই শহিদ মিনারে চলে আসুন। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান আপনাদের বাধা দেয় তাহলে সব শিক্ষক মিলে তাকে বাধ্য করবেন।
এদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে নাগরিক ঐক্য, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস ও ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন। তারা সরকারকে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বিকালে এসব রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
0 Comments