ওয়ান মিনিট টিভি ডেস্ক :
গত ২৯ আগস্ট ২৫’ খ্রি. শুক্রবার সকাল ৯টার সময় পাবনা শহর থেকে পাবনা টেকনিক্যালস্কুল এন্ড কলেজের বাংলা বিভাগের ইন্সট্রাক্টর আলী আকবর মিয়া রাজুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের বৃহত্তম বিল চলনবিলে আনন্দভ্রমণের অংশ হিসেবে নৌবিহার অনুষ্ঠিত হয়। শহর থেকে মটরবাইক ও সিএনজি চালিত আটোযোগে তারা রওনা দিয়ে ভাঙ্গুড়া সরকারি জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজে গিয়ে যাত্রা বিরতি করেন। অতঃপর এখান থেকে রওনা হয়ে সকাল ১১টার মধ্যে ভাঙ্গুড়া নৌবাড়িয়া গুমানী নদীর তীরে গিয়ে পৌঁছে। সেখানে আগে থেকে রিজার্ভে রাখা ইঞ্জিন চালিত ছৌওয়ালা বড় নৌকাযোগে রওনা হন। তাদের চলনবিল ভ্রমণে এ বছরের বিশেষত্ব হলো পরিবারিক আনন্দভ্রমণ। শহরের বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই ছেলেমেয়ে পরিবারসহ অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই নৌবিহারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও তার পরিবার, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এএসএম ফরিদ ও তার বন্ধু লিটন খান, লেখক ও নদী গবেষক ড. মো. মনছুর আলম, এআর গ্রুপের এইচআর ম্যানেজার মতিউর রহমান ও তার পরিবার, এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টর শফিক আল কামাল ও তার ছেলে, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি লি. এর অফিসার ধিমান বিশ্বাস, শহিদ বুলবুল সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের লেকচারার মো. কাওছার হোসেন ও তার পরিবার, হেমরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইমদাদুল হক ও তার পরিবার এবং পাবনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আবুল কালাম আজাদ ও তার পরিবার এবং তার বন্ধু মো. সোহাগ ও তার পরিবারসহ মোট প্রায় ৩০ জন ভ্রমণপিপাষু।
দিনব্যাপী এই নৌবিহারে তারা ভাঙ্গুড়া নৌবাড়িয়া নৌবন্দর থেকে রওনা হয়ে গুমানী নদী অতিক্রম করে চলনবিলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। চলনবিলের অথৈ পানি, পানির উপর রূপালি রৌদ্দুর আনাগোনা, পারিযায়ী পাখি, পাতিহাস, ছোটো-বড়ো নৌকাচলাচল, ছোটো ছোটো ঢেউ, মৃদুমন্দ বাতাস, প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ তােেদর বিমোহিত করে খুব..। এভাবে বেশ কিছুদূর অগ্রসরে হয়ে চলনবিলেন কৃত্রিম ঐতিহ্য দিলপাশার রেলসেতু অবলোকন। সেতুর উপরে উঠা; ছবি-সেলফি তোলা। এবার সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল তাদের রেলসেতেু দিয়ে চলা দ্রুতগামী রেল অতিক্রমের মূহুর্ত প্রত্যক্ষ করা। অতঃপর এখান থেকে আবার নৌকা যোগে দিলপাশার বেলস্টেশনে পৌঁছা এবং যাত্রা বিরতি। শুক্রবার বিধায় সেখানে মসজিদে জুম্মার সালাত আদায় করে আবার নৌকাতে উঠে পড়া। চলনবিলের বেশ কিছুদূর অতিক্রম করে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া নৌবন্দর; যার নাম দিয়েছেন এলাকবাসী মিনি কক্সবাজার। যদিও কক্সবাজরের সাথে শতকরা ৫% ভাগও মিল নেই; তবুও এর একটা আলাদা সৌদর্য বা বৈশিষ্ট লক্ষ্য করা গেলো। এখানে শতশত নৌকা, প্রমোদতরী, ভাসমান রেস্টুরেন্ট, শিশু-কিশোরদের বিনোদনে জন্য বেশ কিছু রাইডার, স্পিডবোট, মনোহরী-মনোলোভা দোকানপাট আরোও কতো কী! এখানে এক ঘন্টার মধ্যাহ্ন বিরতিতে মধ্যাহ্ন ভোজন সারা। এক্ষেত্রে তারা বেছে নিয়েছিলেন ফাইভ স্টার কফি হাইস এন্ড রেস্টুরেন্ট। সাদা ভাত, চলনবিলের টাটকা বাইন মাছের ঝোল, হাঁসের মাংশ ভুনা আর পাতলা ডাউলে দুপুরের খাবার সম্পন্ন করা। এখানে একটু ঘুরাঘুরি, অতঃপর বিকেল ৩:৩০টায় নৌকাতে চড়ে বসা। ভ্রমণে নৗকার মাঝি ছিলেন আত্যন্ত চৌকস এবং গ্রামের সাদামনের মানুষ। তিনি নৌকা চালিয়ে তাদের এই দুই কিলোমিটারের নৌবন্দর ঘুরে ঘুরে দেখালেন। অবশেষে বাড়ির দিকে অর্থাৎ ভাঙ্গুড়া গুমানী তীরে নৌবাড়িরয়ার দিকে রওনা হওয়া। পতিমধ্যে কতো ছবিতোলা, গ্রুপছবি তোলা, সেলফি তোলা, ভিডিওধারণ করা। আর সেই ভিডিও এর কিছু কিছু অংশ আপনাদের সামনে এতোক্ষণ তুলে ধরা হলো।
মূলত, চলনবিলের থৈ থৈ পানি, প্রাকৃতিক পরিবেশ; সর্বোপরি তার অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বহু পর্যটনের সমাগম ঘটে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিনোদন পিপাসুদের বেশি সমাগম ঘটে থাকে। বিকেল গড়িয়ে রাত হলে চলনবিলের রূপে লাগে অন্যরকম ছোঁয়া। এই অপার সৌন্দর্য দেখতে দিন থেকে রাত অবধি উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বিলের বন্দরে বন্দরে নৌকা, স্পীডবোট, সাইন্ড বক্স সুলভে ভাড়া পাওয়া যায়।
0 Comments